তীব্র সমালোচনা উপেক্ষা করেই চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য ‘ঘাস চাষ সম্প্রসারণ’ প্রকল্প একনেক টেবিলে তুলতে যাচ্ছে পরিকল্পনা কমিশন। প্রকল্পটি নিয়ে অযৌক্তিক সমালোচনা হচ্ছে দাবি করে মন্ত্রণালয় বলছে, গবাদিপশুর মানসম্মত পুষ্টি ও দুধের উৎপাদন বাড়াতে ঘাস চাষের আধুনিক প্রশিক্ষণ দরকার।
তবে, অপচয়রোধে যাতে অযৌক্তিক খাতে কোনো ব্যয় অনুমোদন না হয়, সেদিকে কড়া নজরদারির তাগিদ উন্নয়ন অর্থনীতিবিদদের।
উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে একের পর এক অনিয়মের ঘটনা সামনে আসায়, বছরখানেক আগেই নড়েচড়ে বসে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়। এমনকি অর্থের অপচয় বন্ধে প্রকল্পের টাকায় বিদেশ ভ্রমণের ওপর একরকম নিষেধাজ্ঞাও আসে রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে।
আরও পড়ুনঃ ঢাবির ভর্তি পরীক্ষা বিভাগীয় শহরে, পরিবর্তন নম্বর বণ্টনেও
এ অবস্থায় পুষ্টিকর ঘাস চাষ শিখতে বিদেশ পাঠানো হচ্ছে প্রাণিসম্পদের ৩২ কর্মকর্তাকে, এমন খবরে আবারও আলোচনায় পরিকল্পনা কমিশন। প্রকল্প প্রস্তাবনায় দেখা যায়, ১শ ১ কোটি ৫৩ লাখ টাকা মোট ব্যয়ের প্রকল্পে, বিদেশে প্রশিক্ষণ গ্রহণ খাতে ৩২ কর্মকর্তার পেছনে ব্যয় ধরা হয়েছে ৩ কোটি ২০ লাখ টাকা। এমন প্রস্তাবনা নিয়েই মঙ্গলবার (২৪ নভেম্বর) জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির সভায় অনুমোদনের জন্য তোলা হচ্ছে প্রকল্পটি।
যদিও কমিশন বলছে, অযৌক্তিকভাবে না জেনেই সমালোচনা হচ্ছে প্রকল্পটি নিয়ে। বিভিন্ন দেশে গবাদি পশুর জন্য পরিকল্পিতভাবে পুষ্টিকর ঘাস চাষ হয়ে থাকে।
এ প্রসঙ্গে পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য মো. জাকির হোসেন বলেন, ‘ঘাস চাষ শেখা নিয়ে যারা প্রশ্ন তুলছে তাদের জ্ঞান বুদ্ধিই নেই। দেশে ঘাস না হলে গরু দুধ দেবে কিভাবে? আমরা হাইজিন ভ্যারাইটি বানিয়েছি, শংকর জাত করেছি আর গরুকে ঘাস খাওয়াবো না? গরু দুধ দেবে কি বাতাস খেয়ে?
আরও পড়ুনঃ ‘ক্ষমতায় যেতে ওত পেতে থাকা বিএনপির জন্মগত অভ্যাস’
তবে, সরকারি অর্থের যৌক্তিক ব্যয় নিশ্চিতে, বিশেষজ্ঞ টিম দিয়ে প্রকল্প প্রস্তাবনা যাচাই বাছাইয়ের আহ্বান অর্থনীতিবিদদের।
উন্নয়ন অর্থনীতিবিদ ড.আবু ইউসুফ বলেন, যৌক্তিক ব্যয় নিশ্চিত করতে হবে। যদি ঘাস শিখতে বিদেশ যেতেও হয়, তাহলে যত কম ব্যয়ে ও কম মানুষ নিয়ে যাওয়া যায় সেটা খেয়াল রাখতে হবে।
সম্পূর্ণ সরকারি অর্থায়নে চলতি বছরের এপ্রিলে শুরু হয়ে ২০২৪ সালের মার্চে উন্নত জাতের ঘাস চাষ সম্প্রসারণ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর।