ভারতের মুম্বাইয়ে মায়ের মরদেহের সঙ্গে দীর্ঘ ৯ মাস ঘরে কাটানোর ঘটনা ঘটেছে। গত শনিবার (২১ নভেম্বর) ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে বান্দ্রার চুইম গ্রামে চাঞ্চল্যর সৃষ্টি হয়। খবর আনন্দবাজারের।
পুলিশ জানায়, লকডাউন চলাকালীন গত মার্চেই মহিলার বৃদ্ধা মা মারা যান। বিষয়টি কাকপক্ষীও টের পায়নি। মায়ের মরদেহ আগলে রেখে একঘরেই বাস করছিলেন মহিলা।
এক প্রতিবেশী জানান, প্রায়ই মহিলাকে জানলা দিয়ে আবর্জনা ফেলতে দেখা যেত। আবর্জনা ফেলার জন্য বাড়ির ওই জানলাটাই শুধু খুলতেন তিনি। অন্য দরজা-জানলা বন্ধ থাকত বলে দাবি ওই প্রতিবেশীর।
পুলিশ জানিয়েছে, কেন দরজা-জানলা বন্ধ করে রাখা হতো, তা নিয়ে প্রতিবেশীদের মধ্যেও কৌতূহল জন্মেছিল। শনিবারই এক প্রতিবেশী বিষয়টি জানিয়ে পুলিশে খবর দেন। পুলিশ এসে মহিলার বাড়িতে ঢুকতেই দেখতে পান বিছানার ওপর পড়ে রয়েছে অস্থিচর্ম গলে যাওয়া এক বৃদ্ধার দেহ।
প্রতিবেশীদের কাছ থেকে পুলিশ জানতে পেরেছে, বাড়িতে মহিলা তার মাকে নিয়েই থাকতেন। প্রতিবেশীদের সঙ্গে খুব একটা মেলামেশা করতেন না। তা ছাড়া মহিলার মানসিক কিছু সমস্যা থাকায় প্রতিবেশীরাও তাকে এড়িয়ে চলতেন।
প্রাথমিকভাবে পুলিশের অনুমান, মানসিক অসুস্থতার জন্যই হয়তো কাউকে মায়ের মৃত্যু সম্পর্কে জানাতে সাহস পাননি মহিলা। তাই মায়ের মরদেহ ঘরে রেখেই তার সঙ্গে বাস করছিলেন মহিলা।
প্রতিবেশীরা পুলিশকে আরও জানিয়েছেন, কয়েক বছর আগে ওই পরিবারের একটি পোষ্য কুকুর মারা যায়। তার শেষকৃত্য না করে দীর্ঘদিন ঘরেই রেখে দিয়েছিলেন ওই মহিলা ও তার মা।
এ বিষয়ে এক শীর্ষ পুলিশ কর্মকর্তা জানান, মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। কীভাবে ওই বৃদ্ধার মৃত্যু হল এবং এই সংক্রান্ত বহু প্রশ্নের জবাব দিতে পারেননি মহিলা। আপাতত তাকে চিকিত্সার জন্য পাঠানো হয়েছে। মায়ের মৃত্যুর খবর এত দিন ধরে কেন কাউকে জানাননি, জেরা করে তা জানার চেষ্টা করা হবে বলেও জানিয়েছেন ওই পুলিশ কর্মকর্তা।