এ যেন আলাদিনের চেরাগ পাওয়ার মতো, শূন্য থেকে কোটিপতি হওয়ার কাহিনি। বলছি, সম্প্রতি গ্রেফতার হওয়া মনির হোসেন ওরফে গোল্ডেন মনিরের কথা। অবৈধ প্রভাব আর অনৈতিক কাজের মাধ্যমে দোকান কর্মচারী কীভাবে হয়ে ওঠেন হাজার কোটি টাকার মালিক। গ্রেফতারের পর বের হয়ে আসছে একের পর এক গোপন তথ্য।
বাবা ছিলেন বাড়ির কেয়ারটেকার আর মা কাজ করতেন অন্যের বাসায়। তিন সন্তানের মধ্যে সবার ছোট ছিলেন মনির হোসেন ওরফে গোল্ডেন মনির। অভাবের সংসারে লেখাপড়া করা হয়নি বেশিদূর। ছোটবেলা থেকেই কাজ করতেন মানুষের দোকানে। চুরির অভিযোগে চাকরিও চলে যায় বেশ কয়েকবার।
মনির হোসেনই একসময় হয়ে উঠেন গোল্ডেন মনির। স্বর্ণ চোরকারবারের সঙ্গে, জমি দখল হয়ে উঠে তার নেশা। মেরুল বাড্ডার ডিআইটি প্রজেক্টই-এ কয়েক শত প্লট রয়েছে তার। এ ছাড়া দখল করেছেন বেশ কয়েকটি বাজারও। অবৈধ জায়গা বৈধ করার জন্য গড়ে তুলেছেন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।
গোয়েন্দাদের অনুসন্ধানে এখন পর্যন্ত গোল্ডেন মনিরের ৪টি ব্যাংকের ২৫টি অ্যাকাউন্টে ৯৩০ কোটি টাকা পাওয়া গেছে। এ ছাড়া গেল বছরের ১৫ অক্টোবর রাজউকের এনেক্স ভবনের পাঁচতলায় গোল্ডেন মনিরের ভাড়া নেওয়া ৫১৪ নম্বর কক্ষটিতে অভিযান চালান তৎকালীন রাজউক চেয়ারম্যান। সে সময় বাড্ডা পুনর্বাসন প্রকল্পের ক্ষতিগ্রস্তদের ৭১টি প্লটের নথি উদ্ধার করা হয় গোল্ডেন মনিরের কক্ষ থেকে।
নিয়ম অনুযায়ী এসব ফাইল রাজউকের নিজস্ব রেকর্ড রুমে থাকার কথা ছিল। এ সময় রাজউকের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সিল ও সিটি করপোরেশনের ভুয়া প্রত্যয়নপত্র উদ্ধার করা হয়। অভিযানের দিনই রাজউকের পক্ষ থেকে গোল্ডেন মনিরকে আসামি করে মামলা হয়। মামলায় মনিরকে পলাতক দেখানো হলেও পরে তার বিরুদ্ধে আর কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।