সিলেট রায়হান হত্যা মামলার প্রধান অভিযুক্ত এসআই আকবরকে আটক করে রশি দিয়ে বেঁধে রাখার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
সোমবার (০৯ নভেম্বর) ভারতের ডোনা সীমান্ত থেকে স্থানীয় জনতা তাকে আটক করে। পরে তিনি যেন পালাতে না পারেন সে জন্য রশি দিয়ে তাকে বেঁধে রাখা হয়।
দুপুর আড়াইটার দিকে আকবরকে বেঁধে রাখার ২ মিনিট ২৭ সেকেন্ডের একটি ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। এতে স্বস্তির প্রকাশ করেছে সামাজিকমাধ্যম ব্যবহারকারীরা।
ওই ভিডিওতে দেখা যায়, কয়েকজন যুবক এসআই আকবরকে রাস্তায় বসিয়ে তাকে ঘিরে রেখেছেন।এদের মধ্যে দুজন যুবক তার হাত-পা সবুজ রঙের একটি রশি দিয়ে বেঁধে দিচ্ছেন। এ সময় আকবর বারবার বলছেন, আল্লাহ কছম আমাকে বেঁধে রাখবেন না, আমি পালিয়ে যাব না; পাশে থাকা যুবকদের বলতে শোনা গেছে, যে তুই ১০ হাজার টাকার জন্য মানুষ খুন করেছিস, তোকে ছাড়া যাবে না।
আরো পড়ুন: রায়হান হত্যা: এএসআই আশেক-কনস্টেবল হারুন রিমান্ডে
ভিডিও আরও দেখা যায়, হাত-পা বাঁধার পর তাকে জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে কয়েকজন নিয়ে যাচ্ছেন। পরে তাকে বাংলাদেশে পাঠানো হলে পুলিশ গ্রেফতার করে।
সূত্র জানায়, আকবর কানাইঘাটের ডোনা সীমান্তের ওপারে খাসিয়া পল্লিতে বসবাস করছিলেন। খাসিয়ারা কৌশলে তাকে বাংলাদেশে পাঠালে খবর পেয়ে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে।
সিলেট জেলা পুলিশর সহকারী মিডিয়া কর্মকর্তা ও ডিবির পরিদর্শক সাইফুল আলম বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, বরখাস্ত এসআই আকবরকে ভারতীয় সীমান্ত থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
এদিকে গত ২১ অক্টোবর এসআই আকবর হোসেন ভূঁইয়াকে ফাঁড়ি থেকে পালাতে সহায়তা করা ও তথ্য গোপনের অপরাধে বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়ির এসআই হাসান উদ্দিনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
আরো পড়ুন: ‘পুলিশ বাহিনী দিয়ে রায়হান হত্যার নিরপেক্ষ তদন্ত সম্ভব নয়’
গত ১১ অক্টোবর বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে নির্যাতন করে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় সকাল ৭টা ৫০ মিনিটে রায়হানের মৃত্যু হয়। রায়হান সিলেট নগরের আখালিয়ার নেহারিপাড়ার বিডিআরের হাবিলদার মৃত রফিকুল ইসলামের ছেলে। তিনি নগরের রিকাবিবাজার স্টেডিয়াম মার্কেটে এক চিকিৎসকের চেম্বারে চাকরি করতেন।
এ ঘটনায় গত ১২ অক্টোবর রাতে অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে পুলিশি হেফাজতে মৃত্যু আইনে নগরীর কোতোয়ালি মডেল থানায় মামলা করেন রায়হানের স্ত্রী তাহমিনা আক্তার তান্নি।
আরো পড়ুন: রায়হান হত্যা: তিন পুলিশের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি
এ ঘটনায় এসএমপির এসআই আকবরসহ ৪ জনকে সাময়িক বহিষ্কার ও ৩ জনকে প্রত্যাহার করা হয়। বরখাস্তদের মধ্যে রয়েছেন কনস্টেবল হারুনুর রশিদ, তৌহিদ ও টিটু দাস। প্রত্যাহার হওয়া তিনজন হলেন- এএসআই আশেক এলাহী, এএসআই কুতুব আলী ও কনস্টেবল সজীব হোসেন।