বিশ্বের মোট চকলেট উৎপাদনে শ্রমিক হিসেবে কাজ করে অন্তত ১৫ লাখ শিশু, যাদের মধ্যে অনেকের বয়স মাত্র ৫ বছর। সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব শিকাগোর গবেষণায় উঠে এসেছে এ তথ্য। কোকো উৎপাদনে আন্তর্জাতিক কোম্পানিগুলো শিশুশ্রম বন্ধের পদক্ষেপ নিলেও খুব একটা কমেনি এ খাতে শিশুদের কাজ করা।
যুক্তরাষ্ট্রের শ্রম অধিদফতরের তত্ত্বাবধানে করা এ গবেষণায় দেখা গেছে, ১৫ লাখ শিশুর মধ্যে ৪৩ শতাংশই ৫ থেকে ১৭ বছর বয়সী। যারা বিশ্বের বৃহত্তম কোকো উৎপাদনকারী অঞ্চল ঘানা আর আইভোরি কোস্টে কোকো উৎপাদনে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করে। অন্তত অর্ধেক শিশু শ্রমিকই এই অঞ্চলে কাজ করে। ২০০৯ থেকে ২০১৯ সালে ১৪ শতাংশ বেড়েছে কোকো উৎপাদনে শিশু শ্রমিকের সংখ্যা।
১২ থেকে ১৮ বছর বয়সী শিশুদের ঘণ্টা হিসেবে কাজ করানো হয় না। ১৩ হাজার কোটি ডলারের এ খাতকে চাঙা রাখতে ঝুঁকিপূর্ণ পরিবেশে কাজ করে শিশুরা। ২০২৭ সালের মধ্যে প্রতি বছর ৫ শতাংশ করে বাড়বে চকলেট ইন্ডাস্ট্রির পরিধি। ২০২৪ সালে চকলেট ইন্ডাস্ট্রির আকার হতে পারে ১৩ হাজার ৯০০ কোটি ডলারের।
গত এক দশকে চকলেট উৎপাদনে শিশু শ্রম ৩০ শতাংশ বেড়েছে। এ সময়ে কোকো উৎপাদনও বেড়েছে ৬২ শতাংশ। এ অঞ্চলে শিশু শ্রমের বিষয়টি খুব বেশি তদারকিও করা হয় না। এ কারণে শুধু কোম্পানিগুলোর পক্ষে এ খাতে শিশুশ্রম বন্ধ বা নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব নয়।
বিশ্বের মোট উৎপাদিত চকলেটের ৮০ শতাংশই আসে ১০০ সদস্যের বিশ্ব কোকো ফাউন্ডেশনভুক্ত কোম্পানিগুলো থেকে। তারা বলছেন, ২০২৫ সালের মধ্যেই শিশুশ্রম তদারকি আরো জোরদার করা হবে এবং কোকো চাষিদের জন্য ১২০ কোটি ডলারের প্রণোদনা দেয়া হবে।
অথচ ২০১০ সালে মার্স, নেসলে, হারশি আর কারগিলের মতো কোম্পানি সম্মতি জানিয়েছিল যে, ২০২০ সালের মধ্যে তারা কোকো উৎপাদনে শিশুশ্রম ৭০ শতাংশ কমিয়ে আনবে।
আইভোরি কোস্ট বিশ্বের বৃহত্তম কোকো উৎপাদনকারী দেশ। এরপরেই রয়েছে ঘানা। দুই দেশ মিলে প্রতি বছর উৎপাদন করে ৮ লাখ ৫০ হাজার টন কোকো। কিন্তু গত কয়েক বছরে উৎপাদন কিছুটা কমেছে।