বাবা খোরশেদ আলমের স্বপ্ন ছিল অ্যাথলেটিকসে দেশের প্রতিনিধিত্ব করা। মা শিরিন আক্তারও স্বপ্ন দেখেছিলেন সাফে হাইজাম্পে অংশ নিয়ে পদকজয়ের। তাদের স্বপ্নপূরণ চান দুই কন্যা সাবারিয়া ও সাবরিনার মাধ্যমে। করোনাকালেও সপরিবারে তাই নিয়ম করে আসেন বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়াম।
কাঠপাথরের শহরে ভোর নামে। স্কুটারে চেপে বাবা-মা দুই কন্যাকে নিয়ে আসেন বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে। করোনাকালে গণমাধ্যমের চোখ এড়িয়ে এসব থাকে আড়ালে আবডালে। বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়াম সাবারিয়া-সাবরিনার ক্লাসরুম। শিক্ষকের ভূমিকায় বাবা খোরশেদ ও মা শিরিন আক্তার।
বাবা মির্জা খোরশেদ আলম ও মা শিরিন আক্তার দুজনই ছিলেন একসময়ের দেশ সেরা অ্যাথলিট। নিজেদের অসম্পূর্ণতা পূরণ করতে চাইছেন দুই মেয়েকে দিয়ে। শুধু গুরুর ওপর নির্ভর করেই বসে নেই। মেয়েদের গড়ে তুললে তারাও সম্পদ হতে পারেন মনে করেন সাফে দেশের হয়ে হাইজাম্পে প্রতিনিধিত্ব করা এই অ্যাথলিট।
মা শিরিন আক্তার বলেন, ছয় বছর ধরে মেয়েদের এখানে নিয়ে আসি। তাদের নিয়মিত প্রশিক্ষণ দিচ্ছি। আমি চাই তারা প্রতিষ্ঠিত হয়ে উঠুক। যখন তারা প্রতিষ্ঠিত হবে তখন তারা নিজেরাই নিজেদের এগিয়ে নিতে পারবে।
বাবা খোরশেদ আলম মেয়েদের আরও দক্ষ করে গড়ে তুলতে করছেন অ্যাথলেটিকসে 'এ' কোচেস ট্রেনিং। ভোর হতেই মেয়েরা নিজেরাই প্রস্তুত হয়ে বাবাকে নিয়ে চলে আসেন।
বাবা খোরশেদ আলম জানান, ওরা আমাদের আগেই রেডি হয় সকালে। মাঠে আসার জন্য ওদের আগ্রহই বেশি।
অস্টম শ্রেণিতে পড়া সাবরিনা গেল বছর জাতীয় রোলার স্কেটিংয়ে চ্যাম্পিয়নশিপে রুপা জিতেছেন, পঞ্চম শ্রেণিতে পড়া সাবারিয়া জিতেছেন স্বর্ণ। দুজনই অ্যাথলেটিকস ছাড়াও খেলেন জিমন্যাস্টিক। এই বয়সেই স্বপ্ন হার্ডলস ও ১০০ মিটার দৌড়ে দেশের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করা।
দুই মেয়ে সাবারিয়া ও সাবরিনা বলেন, অলিম্পিকে খেলার ইচ্ছে আছে। কোচের চেয়ে বাবা-মায়ের কাছ থেকে অনেক ভালো প্রশিক্ষণ পাই।
বাবা-মায়ের হাত ধরে যদি মেয়েরা এভাবে গড়ে ওঠে তবে কোনো অশুভশক্তি মেয়েদের দমাতে পারবে না, নিজেদের আত্মরক্ষা নিজেরাই করতে পারবে মতো খোরশেদ-শিরিন দম্পতির।