বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সাবেক আঞ্চলিক উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. মোজাহেরুল হক জানিয়েছেন, দেশে করোনা নিয়ন্ত্রণের দুটো উপায় রয়েছে। একটি হলো- ভ্যাকসিন। আরেকটা হলো- ডব্লিউএইচও’র নির্দেশনা ব্যক্তি থেকে প্রাতিষ্ঠানিক, সব পর্যায়ে প্রয়োগ করা। দেশের শীর্ষস্থানীয় একটি সংবাদমাধ্যমকে দেয়া সাক্ষাৎকারে তিনি এ কথা জানান।
স্বাস্থ্যমন্ত্রীর বক্তব্যের যথার্থতা ও এর কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি আছে কিনা, জানতে চাইলে তিনি বলেন, তিনি (স্বাস্থ্যমন্ত্রী) যে বক্তব্য দিয়েছেন, সেটা রাজনৈতিক বক্তব্য। বিজ্ঞানের সঙ্গে এর কোনো সম্পর্ক নেই। বিজ্ঞান বলছে, বাংলাদেশে করোনার সংক্রমণ বাড়ছে এবং মৃত্যুও হচ্ছে। ডব্লিউএইচও’র মতে, যেসব দেশগুলোতে করোনার সংক্রমণের হার বেশি, সেগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। সুতরাং আমাদের সংক্রমণ সারাদেশব্যাপী যে পর্যায়ে আছে, সেটাকে নিয়ন্ত্রণের জন্য সঠিক কৌশল ও পরিকল্পনা দরকার। যেটা বাংলাদেশে প্রথম থেকেই ছিল না এবং এখনও নেই।
এর আগে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক গতকাল শনিবার (১৫ আগস্ট) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৫তম শাহাদৎবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে দোয়া মাহফিল ও আলোচনা সভায় বলেন, ভ্যাকসিন আসুক বা না আসুক কোভিড-১৯ বাংলাদেশ থেকে এমনিতেই চলে যাবে। যেখানে পুরো পৃথিবী ভ্যাকসিনের জন্যে অধির আগ্রহে অপেক্ষা করছে, সেখানে স্বাস্থ্যমন্ত্রী মনে করছেন ভ্যাকসিন ছাড়াই করোনা চলে যাবে।
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে ভ্যাকসিন প্রয়োজন কি না বা কতটুকু প্রয়োজন? জানতে চাইলে ডা. মোজাহেরুল হক জানান, দেশে করোনা নিয়ন্ত্রণের দুটো উপায়। একটা হলো- ভ্যাকসিন। আরেকটা হলো- ডব্লিউএইচও’র নির্দেশনা ব্যক্তি থেকে প্রাতিষ্ঠানিক, সব পর্যায়ে প্রয়োগ করা। এখন এই দুটোর ব্যাপারেই গুরুত্ব দিতে হবে। তবে, আমাদের মনে রাখতে হবে, আলটিমেটলি ভ্যাকসিনের কোনো বিকল্প নেই। সেজন্য করোনা নিয়ন্ত্রণে রাখতে আমাদেরকে স্বাস্থ্যবিধিগুলো যেমন মানতে হবে, পাশাপাশি যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ভ্যাকসিন পাওয়ার জন্য আমাদের যা করণীয়, সেটা করা উচিত। ভ্যাকসিন পাওয়ার দৌঁড়ে বাংলাদেশে অনেক পিছিয়ে রয়েছে।
এ দিকে দেশে করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হয়ে প্রতিদিন গড়ে ৩০ জনেরও বেশি মানুষ মারা যাচ্ছেন। নতুন শনাক্তের সংখ্যাও গড়ে প্রায় তিন হাজার।
রোববার (১৬ আগস্ট) দুপুরে করোনাভাইরাস বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতরের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে আরও ২ হাজার ২৪ জনের দেহে। এ নিয়ে দেশে মোট শনাক্ত হলেন ২ লাখ ৭৬ হাজার ৫৪৯ জন। এছাড়া আক্রান্তদের মধ্যে আরও ৩২ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ৩ হাজার ৬৫৭ জন। এদের মধ্যে ২৫ জন পুরুষ এবং ৭ জন নারী।