মোংলায় প্রেম করে গোপনে বিয়ে করার দায়ে অপহরণ মামলায় পুলিশের হাতে গ্রেফতার করে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে এক যুবকে। উপজেলার বুড়িরডাঙ্গা ইউনিয়নের দীপঙ্কর বাওয়ালীর করা মামলায় গ্রেফতার হয় একই এলাকার মুজাহিদুল ইসলাম।
শনিবার (১৫ আগস্ট) দুপুরে তাকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। তবে এ মামলায় ৩ আসামির মধ্যে একজন আটক হলেও বাকি দুজনকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে বলে জানায় পুলিশ।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, বুড়িরডাঙ্গা এলাকার দীপঙ্কর বাওয়ালীর কলেজ পড়ুয়া কন্যা দিগরাজ কলেজের একাদশ শ্রেণির দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী। স্কুল জীবন থেকেই প্রতিবেশী মুজাহিদুল ইসলামের সাথে পরিচয়। এ সুবাদে তাদের বাড়িতেও আসা যাওয়া করতো কলেজ পড়ুয়া কন্যা। তবে কলেজে যাওয়ার পথে ওই ছাত্রীকে উত্যক্ত করতো মুজাহিদ বলে তার বাবর অভিযোগ। ব্যাপারে মুজাহিদের মা বাবাকে বহুবার এ ঘটনা অবহিত কররেও কোন প্রতিকার পাইনি ভুক্তভোগী ওই পরিবারটি।
গত ২০ জুন সকাল ৬টার দিকে কলেজ পড়ুয়া কন্যা ঘোরাফেরা করার উদ্দেশ্যে বাড়ীর সামনের রাস্তায় বের হলে আগে থেকেই ওত থাকা মুজাহিদুল ইসলাম, বাবা অহিদ শেখ ও মা আসমা বেগমসহ অন্যদের সহায়তায় জোর পূর্বক মটরসাইকেল যোগে অপহরণ করে নিয়ে আটকে রাখে বলে মামলায় উল্লেখ করে।
পরে মেয়ের বাবা দীপঙ্কর বাওয়ালী আসামি মুজাহিদুল ইসলামের বাবা-মা ও আত্মীয়দের কাছে মেয়েকে ফেরত চাইলে তারা দীর্ঘদিন যাবত মেয়েকে ফেরত দিবে বলে বার বার সময় নিয়া কাল ক্ষেপণ করে। কিছুদিন যাওয়ার পরে মেয়েকে ফেরত না দিয়ে বিভিন্ন ধরনের টাল বাহানা মূলক কথাবার্তা বলে এবং লোকজনের মাধ্যমে তাদের হুমকি ধামকি দেয় বলেও মামলার এজাহারে উল্লেখ করে দীপঙ্কর বাওয়ালী। এ ব্যাপারে বহুদিন অপেক্ষার পরেও মেয়েকে ফেরত না পেয়ে ১১ আগস্ট দীপঙ্কর বাওয়ালী বাদী হয়ে মুজাহিদুল ইসলাম (২০), বাবা অহিদ শেখ (৫০) ও মা আসমা বেগম (৪৫) কে আসামি করে মোংলা থানায় নারী নির্যাতন ও অপহরণ মামলা দায়ের করেন।
এ ব্যাপারে মুজাহিদুল ইসলামের পিতা অহিদ শেখ জানায়, দীপঙ্করের মেয়ে তার ছেলে মুজাহিদের সাথে স্কুল জীবন থেকে দীর্ঘদিন প্রেমের সম্পর্ক রয়েছে। চলতি বছরের ১৩ ফেব্রুয়ারি তার মেয়ে স্বেচ্ছায় আমার ছেলের সাথে চট্টগ্রামে আমাদের কাছে চলে যায়। সে সময় মেয়ের বাবা ও মাকে খবর দিয়ে তাদের কাছে ফেরত দেয় এবং তারা একটি অঙ্গিকার নামা দিয়ে মেয়েকে নিয়ে চলে আসে। পরে বহুবার ছেলে মুজাহিদের সাথে যাওয়ার চেষ্টা করলে তার অভিভাবকদের জানানো হয়েছে। শেষে ২০ জুন মেয়ে নিজের ইচ্ছায় চট্টগ্রামে চলে আসে এবং কাগজ পত্রের মাধ্যমে ধর্মান্তরিত হয়ে বিয়ে করে তারা।
মোংলা থানার অফিসার ইনচার্জ মো. ইকবাল বাহার চৌধুরী জানায়, ১১ আগস্ট একটি অপহরণ মামলার সূত্রধরে তিন জনের মধ্যে প্রধান আসামি মোজাহিদুল ইসলামকে চট্টগ্রাম থেকে আটক করা হয়। তাকে শনিবার দুপুরে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। অন্য আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে বলেও জানায় পুলিশের এ কর্মকর্তা।