সাগরে বাঁধ দিয়ে নতুন চ্যানেল তৈরির মাধ্যমে করোনাকালীন জটিলতা কাটিয়ে আবারো শুরু হয়েছে মহেশখালী মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্র বন্দর নির্মাণের কাজ। সম্ভাব্যতা যাচাই সম্পন্ন করার পাশাপাশি সরকারের কাছ থেকে ডিপিপি অনুমোদনও পেয়ে গেছে ১৭ হাজার কোটি টাকার এই প্রকল্প। এখন শুরু হবে প্রস্তাবিত বন্দরের ডিটেইল ডিজাইন তৈরির কাজ।
বিশ্ব বাণিজ্যের সাথে তাল মেলাতে গিয়ে সক্ষমতার দিক থেকে হিমশিম খাচ্ছে চট্টগ্রাম বন্দর। প্রয়োজনের তুলনায় সীমিত জনবল এবং যন্ত্রপাতি দিয়ে এই বন্দরকে বছরে ৩০ লাখের বেশি কন্টেইনার হ্যান্ডলিং করতে হচ্ছে। এই অবস্থায় জরুরি হয়ে পড়ে বিকল্প ব্যবস্থা হিসাবে গভীর সমুদ্র বন্দর নির্মাণের। আর গভীর সমুদ্র বন্দরের জন্য প্রথম পছন্দের তালিকায় রয়েছে মাতারবাড়ির নাম।
চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স পরিচালক এস এম আবু তৈয়ব বলেন, 'মাতারবাড়িতে গভীর জাহাজগুলো আসতে পারে।'
বাংলাদেশ শিপিং এজেন্ট এসোসিয়েশনের সহ সভাপতি শফিকুল আলম জুয়েল বলেন, 'চট্টগ্রাম বন্দরে যেমন কঠিন নিবন্ধনটা আছে মাতারবাড়িতে তেমন নেই। ওখানে ১২-১৩ মিটার জাহাজ অনায়াসে নিয়ে আসা যাবে।'
গত কয়েক বছর ধরে কক্সবাজার জেলার মহেশখালী উপজেলার মাতারবাড়ি এলাকায় চলছে গভীর সমুদ্র বন্দর নির্মাণের পরিকল্পনা। মূলত ১৩২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য জেটি নির্মাণ করতে গিয়েই মাথায় আসে সেটিকে গভীর সমুদ্র বন্দরে রূপ দেয়ার। কিন্তু করোনা জটিলতার কারণে গত ফেব্রুয়ারি মাস থেকে বন্ধ হয়ে যায় সব ধরনের কাজ।
তবে সম্প্রতি এই বন্দরের জাহাজে ভেড়ানোর জন্য প্রায় ১৫ কিলোমিটার এলাকা ড্রেজিং করে তৈরি করা হয়েছে দু'কিলোমিটার দীর্ঘ নতুন চ্যানেল। ১৬ মিটার গভীর এই চ্যানেলে ঢুকতে পারবে যে কোনো আকৃতির জাহাজ।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ সদস্য মোহাম্মদ জাফর আলম বলেন, 'করোনার কারণে যে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিলাম, সেটি তো আছেই। চুক্তি হয়ে গেলেই আমাদের কার্যক্রম শুরু হয়ে যাবে।'
সাগরে বাঁধ দিয়ে যেমন চ্যানেল তৈরি করা হয়েছে। তেমনি সাগরের মাটি দিয়েই তৈরি করা হচ্ছে এই বন্দরের ভূমি ব্যবস্থাপনা। প্রথম পর্যায়ে এই বন্দরে তিনটি জেটি থাকবে। তবে নতুন এই বন্দরকে কার্যকর করতে কন্টেইনার পরিবহনের জন্য বিশেষায়িত সড়ক ও রেলপথ নির্মাণেন তাগিদ দিচ্ছেন ব্যবসায়ীরা।
পিআইএল লিমিটেড মহা ব্যবস্থাপক আবদুল্লাহ জহির বলেন, মাতারবাড়ি বন্দর করতে চাইলে রেললাইন এবং সড়ক সংযোগটা খুবই জরুরি।'
২০২৬ সালে অপারেশনে যাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে শুরু হওয়া নির্মাণ কাজে ১০ হাজার কোটি টাকার বেশি দিচ্ছে জাইকা। আর বাকি চার হাজার কোটি টাকা সরকার এবং ৩ হাজার কোটি টাকা দেবে বন্দর কর্তৃপক্ষ।