পুরো এলাকার মানুষ পানির জন্য অসহায় একটি চক্রের কাছে। রাজধানীর মিরপুরের কাজীপাড়া-শেওড়াপাড়ার কয়েক লাখ মানুষ দীর্ঘদিন ধরে পানি সংকটে যা করোনার এই সময়ে এসে তীব্র আকার ধারণ করে। এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে একটি চক্র পানি দেওয়ার নাম করে অবৈধ সংযোগ দিয়ে তুলে নিচ্ছেন লাখ লাখ টাকা। এলাকাবাসীর অভিযোগ ওয়াসা দীর্ঘদিন ধরে পানি দেওয়ার আশ্বাস দিলেও পানি পাচ্ছে না তারা।
দীর্ঘ দিনের পানির কষ্টে ভোগা পূর্ব কাজীপাড়া-শেওড়াপাড়ার হাজার হাজার পরিবারের কাছে ভরসার নাম ড্রাম। পুরনো সংকট করোনা কালে এসে ভয়াবহ রূপ নিয়েছে।
এলাকাবাসীদের একজন বলেন, 'একটু পর পর যে এই করোনার সময়ে হাত ধুবো সেই সুযোগ আমাদের নেই।'
আরেকজন বলেন, 'এই এলাকায় পানি নেই ৪-৫ বছর ধরে।'
একজন বাড়িওয়ালা বলেন, 'পানি দেয় না। গতমাসে একবারেই পানি নেই। কিন্তু বিল আসছে।'
সেই সুযোগে মাকড়শার জালের মতো ছড়িয়ে পড়েছে অবৈধ পানির সংযোগ। যারা বাড়তি অর্থ গুনতে পারছে তাদের মিলছে পানি, অন্যদের কপালে দুর্ভোগ।
এলাকাবাসীর দেয়া তথ্য মতে, লিয়াকত আলীই এই অঞ্চলের পানির নিয়ন্ত্রক। অভিযোগ আছে ওয়াসার চোখের সামনেই ঘটছে এমনটা।
এলাকাবাসীদের একজন বলেন, 'খারাপ লোকেদের সাথে সিন্ডিকেট করে কাজগুলো করছে। পানির একটা লাইন দিলেই ১ লাখ টাকা।'
এলাকাবাসীদের আরেকজন বলেন, 'কি কারণে ইঞ্জিনিয়ার সাইফুল সাহেব কোনো নোটিশ না করে লাইনগুলো কেটে দিল বুঝলাম না।'
স্থানীয় জনপ্রতিনিধি বলছেন, ওয়াসার অসহযোগিতায় দীর্ঘদিনের এই সমস্যা সমাধান করতে না পারায়, সুযোগ নিচ্ছে এই পানি চক্র।
কাউন্সিলর লিয়াকত মিরপুর ১০ জোন ওয়াসার প্রকৌশলী সাইফুল ইসলাম বলেন, 'যে পানি এলাকায় লাগে সেটি প্রভাবশালীরা জোর খাটিয়ে অন্যখাতে পানি প্রবাহ করে।'
পানি চক্রের প্রধান লিয়াকত আলী বলেন, 'টাকার কন্ট্রাক আমি জানি না। আমার কাজ পাইপটা দিয়ে শুধু ঢালাই করে দেওয়াই আমার কাজ।'
উত্তর সিটি কর্পোরেশন ১৪ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর হুমায়ুন রশিদ জনি বলেন, 'দালাল আছে বাড়িওয়ালার সাথে কন্ট্রাক করায়। তারা ২০-২৫ দিন পানি পায় তারপর আবার চলে যায়।'
এলাকাবাসীর চাওয়া এবার আর আশ্বাস নয়, স্থানী সমাধান হোক দীর্ঘদিনের এই পানি সংকটের।