জীবনের ব্যাপ্তি ৭৭ বছর, তার মধ্যে অসুস্থতাজনিত নির্বাক জীবন কাটিয়েছেন ৩৪ বছর। আর কেবল ২৪ বছরের সাহিত্যরচনার কাব্যলক্ষ্মীতে ভর করে তিনি হয়েছেন কালোত্তীর্ণ। নবযুগ পেয়েছে যুগ পরিবর্তনের দ্রষ্টা।
দুর্ভিক্ষ, মহামারি ও দুর্যোগে তিনি গেয়ে উঠেছেন সাম্যের গান। ১২১তম জন্মদিবসেও নজরুল তাই একইভাবে প্রাসঙ্গিক সর্বজনীন আর হিতৈষী।
দ্রোহ আর প্রেম যেখানে দীপাবলীর শিখায় হয়েছে সর্বজনের নিত্য প্রেমের বৃন্দাবন। রণভূমে যিনি সংশপ্তক, প্রেমে তিনি প্রবাদপ্রতিম, আর তিনিই কাজী নজরুল।
আত্মত্যাগের অগ্নিমন্ত্রে দীক্ষিত হয়ে তরুণ বয়সেই যোগ দিয়েছিলেন ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনে। তার অশান্ত রণতূর্যের খড়গ প্রলয়োল্লাসে বক্ষভেদ করে অত্যাচারীর আবার বাঁকা বাঁশের বাঁশরিতে তিনি বাজান বিষের অমৃতসুধা।
মাত্র ২৪ বছরের সাহিত্যকাল। তার কবিতার পংক্তি শোষকের জন্য বেজেছে টঙ্কার হয়ে... আবার গানের স্বরলিপিতে লেখা হয়েছে ব্যথিতের বেদন, মৃত্যুক্ষুধার আর্তি।
উৎপীড়কের ক্রন্দন রোল মহাকাব্য হয়ে রয়ে গেছে কবিতায় ছাপা অক্ষরে...বারবার উচ্চারিত হয়েছে নবীনের গান, তারুণ্যের স্লোগান। বিদ্রোহ পেরিয়ে নজরুল তাই প্রেমের কবি, মানবতার কবি, নবযুগের কবি।
দুর্ভিক্ষ, মহামারি ও দুর্যোগে তিনি গেয়ে উঠেছেন সাম্যের গান। মানুষের চেয়ে বড় কিছু নয়, নহে কিছু মহীয়ান।
হোক প্রাকৃতিক দুর্যোগ, মহামারি অথবা বেজে উঠুক যুদ্ধের দামামা, সাহিত্যে নজরুল জ্বলে ওঠেন ধুমকেতুর মতো। চির নতুনের আহবানে আবারো গেয়ে ওঠেন জীবনের জয়গান।