বিশ্বজুড়ে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে নানা ধরনের বিভ্রান্তি। গরমে কোভিড ১৯ সংক্রমণ হয় না কিংবা বিসিজি টিকা দিলেই রক্ষা - এমন সব তথ্য আসছে ঘুরেফিরে। বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলছেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার স্বীকৃতি ছাড়া কোনো তথ্যের ওপর নির্ভর করে উদাসীন হওয়ার কোনো অবকাশ নেই।
করোনাভাইরাস যত ছড়িয়ে পড়ছে, এটি সম্পর্কে উৎসুক হয়ে উঠছে মানুষ। এর ফলে এমন সব তথ্যও মানুষের মনে জায়গা করে নিচ্ছে যার বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই।
কোভিড ১৯ সংক্রমণ শুরুর পর থেকেই বলা হচ্ছে, উষ্ণ আবহাওয়ায় ভাইরাসটি টিকে থাকতে পারে না। বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, মানুষ থেকে মানুষে সংক্রমণ হওয়ায় যে কোনো আবহাওয়াই ছড়াতে পারে কোভিড ১৯। অন্যদিকে বিসিজি টিকার প্রয়োগ করোনার ঝুঁকি কমায়। এক মার্কিন গবেষণায় উঠে আসা এমন তথ্যও সমর্থন করছে না বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা। করোনায় মৃত্যুতে শীর্ষস্থানীয় দেশ ফ্রান্স, ইরান, চীনে কয়েক বছর আগেও ছিল বিসিজি টিকার সার্বজনীন প্রয়োগ।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, একটি টিকা কেবল নির্দিষ্ট রোগেরই প্রতিরোধ গড়ে তোলে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইরোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান ডা. সাইফ উল্লাহ মুনসী বলেন, এমন কোনো টিকা আবিষ্কার এখনো হয়নি যে করোনাভাইরাস প্রতিরোধ করতে পারে। ভ্যাকসিনের কনসেপ্ট হচ্ছে যে জীবাণুকে আপনি প্রতিরোধ করতে চান তা আগের থেকে শরীরে দিয়ে রাখা। বিসিজি ভ্যাকসিন টিবির জন্য।
আইইডিসিআরের উপদেষ্টা ডা. মুশতাক হোসেন বলেন, মধ্যপ্রাচ্যেও হঠাৎ রোগীর সংখ্যা বেড়ে গেছে। তাই এই কথার কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই যে বিসিজি টিকা থাকলে হবে না।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কোভিড ১৯ প্রতিষেধক আবিষ্কার না হওয়া পর্যন্ত পরিচ্ছন্নতা ও সামাজিক দূরত্বের ওপরই সবচেয়ে বেশি জোর দিতে হবে।
আইইডিসিআরের উপদেষ্টা ডা. মুশতাক হোসেন বলেন, সব জায়গা একটা গবেষণার দিকে যাবে । সে সময় পর্যন্ত একে প্রতিরোধ করার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করতে হবে।
অধ্যাপক ডা. প্রদীপ কুমার সেনগুপ্ত বলেন, এ মুহূর্তে যে সব নির্দেশনাবলী দেয়া হচ্ছে সেগুলো পালনের ওপর জোর দিতে হবে।
নভেল করোনাভাইরাস নিয়ে উপসংহারে পৌঁছানোর সময় এখনো আসেনি বলেও মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।