করোনার কারণে ঘরে থাকা অসহায় মানুষদের বাড়ি বাড়ি খাদ্য পৌঁছে দেয়া হলেও রোমেলা-রিজিয়াদের বাড়িতে গত ১২দিনে একমুঠো চালও পৌঁছেনি। এ কারণেই ভিক্ষার ঝুলি নিয়ে রাস্তায় বেরিয়েছেন তারা। শুক্রবার (৩ এপ্রিল) ভিক্ষার ঝুলি নিয়ে বের হন তারা।
চুয়াডাঙ্গাকে ভিক্ষুকমুক্ত ঘোষণা করা হয় ২০১৭ সালে। তবে এখনো ভিক্ষা করে দিনযাপন করছেন চুয়াডাঙ্গা জেলা শহরের সিঅ্যান্ডবি মাঠপাড়ার বৃদ্ধা রোমেলা বেগম ও একই এলাকার ঘাটপাড়ার রিজিয়া বেগম। তাদের দুজনের প্রায় ষাটের কোঠায় বয়স। শুক্রবার দুপুরে তাদেরকে দেখা যায় চুয়াডাঙ্গা শহরের কোর্টপাড়ায় ভিক্ষার ঝোলা হাতে মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন।
রোমেলা বেগম জানান, গত ১২দিন ভিক্ষা করতে বের হননি।
তিনি বলেন, এট্টু চাইল আর এট্টু কপি ঘুইটে কয়মাপু খাইয়েলাম। একুন ঝুলা নিয়ে না বেরিয়ে পাললাম না।
রোমেলা জানান, তার বাড়িতে একজন অন্ধ অসুস্থ নাতিসহ কয়েকজন মানুষ। তিনি শুনেছেন সরকার সাহায্য দিচ্ছে কিন্তু একমুঠো চাল গত ১২দিনে তাদেরকে দেয়নি। এ কারণেই ভিক্ষা করতে বাইরে বেরিয়েছেন।
একই রকম কথা জানালেন রোমেলার সঙ্গে বের হওয়া একই এলাকার বৃদ্ধা রিজিয়া বেগম। তারও বাড়ির আয়রোজগার করার মতো কেউ নেই। লোকের দ্বারে দ্বারে চেয়ে চিনতে সংসার চলে তার। রোমেলা ও রিজিয়া অভিযোগ করে বলেন যারা সাহায্য দেয় তারা তাদের আত্মীয় স্বজন চিনে চিনে দেয়। তাই তারা পান না।
চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, কোভিড-১৯ পরিস্থিতির কারণে জেলায় ৫৩৩ মে.টন চাল ও নগদ ১১ লাখ ৪৯ হাজার ৫শ’ টাকা সহায়তা দিয়েছে সরকার। এরমধ্যে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলায় ৯৯.৫০ মেট্রিকটন চাল ও ২ লাখ ৪৫ হাজার টাকা ৯ হাজার ৯৫০ পরিবারের জন্য বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।
জেলা প্রশাসক নজরুল ইসলাম সরকার বলেন, বিচ্ছিন্ন এ রকম দু’একটি ঘটনা থাকতে পারে। আমরা প্রায় সাতদিন ধরে দরিদ্র মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে খাদ্য সহায়তা পৌঁছে দিচ্ছি। খাদ্য সহায়তার বিষয়টি সরাসরি জেলা প্রশাসনের ম্যাজিস্ট্রেটরা তদারকি করছেন। কোনোভাবে এ ধরনের খবর পেলেই তার বাড়িতে খাদ্য সহায়তা পৌঁছে দেয়া হবে। আর সরকারি এ সহায়তা চলমান থাকবে।