করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব রোধে দেশের সকল দোকানপাট বন্ধ হলেও খোলা রয়েছে কাঁচাবাজার, মুদি এবং ওষুধের দোকান। এ অবস্থায় দুরত্ব বজায় রাখতে অভিনব পদ্ধতি অবলম্বন করে বাজার সদায় করছেন যশোর শহরের বারান্দীপাড়া বউবাজারের ক্রেতারা।
এক মিটার দূরত্বে বৃত্ত দিয়ে কেনাকাটা করতে বাধ্য করা হয়েছে ঘনবসতির এ এলাকার বাসিন্দাদের। তবে এমন উদ্যোগে সন্তুষ্ট ক্রেতা ও বিক্রেতা উভয়েই। বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া কোভিড-১৯ করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত বাংলাদেশও। ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব রোধে আজ থেকে সারা দেশে সকল প্রকার গণপরিবহন, দোকানপাট বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
একইসাথে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে চলাচল সীমত করা হয়েছে। তবে আওতামুক্ত রাখা হয়েছে কাঁচাবাজার, মুদি দোকান ও ফার্মেসি। ফলে যশোরের কাঁচাবাজারে মানুষের উপস্থিতি রয়েছে চোখে পড়ার মতো। এ অবস্থায় ভাইরাসের সংক্রামন রোধে দূরত্ব বজায় রাখতে অভিনব পদ্ধতি অবলম্বন করে বাজার সদায় করতে যশোর শহরের বারান্দীপাড়া বউবাজারে নেয়া হয়েছে অভিনব উদ্যোগ। স্থানীয় উদয়ন ফাউন্ডেশন নামে একটি সংগঠনের সদস্যরা বাজারের দোকানগুলোর সামনে এক মিটার দূরত্বে বৃত্ত একে দিয়েছেন।
ওই বৃত্তের মধ্যে থেকেই কেনাকাটা করতে বাধ্য করা হয়েছে ঘনবসতির এ এলাকার বাসিন্দাদের। আর বৃত্তের বাইরে থাকলে পণ্য দিচ্ছেন না দোকানীরাও। আজ থেকে চালু করা হয়েছে এ ব্যবস্থা।
উদয়ন ফাউন্ডেশনের প্রধান উপদেষ্টা শামীম আহমেদ জানান, সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখতে গতকাল রাতে বাজারে বৃত্ত একে দেয়া হয়েছে। ঘনবসতি এলাকার এ বাজারের বাড়ির বউরা বাজার করেন। তারা খুব বেশি সচেতন নয়। যে কারণে বৃত্তের মধ্যে তাদের বাজার করতে বাধ্য করা হয়েছে। তিনি বলেন, দোকানীদের বলে দেয়া হয়েছে বৃত্তের মধ্যে না থাকলে পণ্য বিক্রি না করার জন্য। দোকানিরা নিরাপদ থাকার স্বার্থে তাদের কথা শুনে বেচাকেনা করছেন।
তিনি আরো বলেন, এছাড়া দোকানিদের মধ্যে বিনামূল্যে মাস্ক ও গ্লোবস বিতরণ করা হয়েছে। যাতের তারা ক্রেতার বা পণ্যের সংস্পর্শ থেকে দূরে থাকেন।
তবে এমন উদ্যোগে সন্তুষ্ট ক্রেতা ও বিক্রেতা উভয়েই। জালাল উদ্দিন নামে এক দোকানী বলেন, এলাকার ছেলেরা খুব ভালো একটা উদ্যোগ নিয়েছে। দোকানে একাধিক লোক আসলে তাদের বৃত্তের মধ্যে দাঁড়িয়ে পর্যায়ক্রমে পণ্য নিতে অনুরোধ করছি। সকলেই তা মেনেই পণ্য ক্রয় করছেন।
শাকিল হোসেন নামে এক ক্রেতা বলেন, সকালে বাজার করতে এসেই বৃত্ত আকা দেখলাম। দোকানীদের জীজ্ঞাসা করলে তারা জানিয়েছে, বৃত্তের মধ্যে দাঁড়িয়ে একে একে বাজার করতে হবে। কুব ভালো উদ্যোগ। এতে সরকার যে সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখার কথা বলেছে তা কার্যকর হচ্ছে। তাছাড়া বাজারে প্রচুর লোক।
কে করোনা ভাইরাস বহন করছে তাতো জানা নেই। অন্তত দূরত্ব বজায় থাকলে নিরাপদ থাকা যাবে। ফলে যশোরের সকল বাজারে এমন ব্যবস্থা নেয়া হলে ভাইরাসের সংক্রামন ঠেকানো সম্ভব হবে বলে মন্তব্য করেন যশোর উদয়ন ফাউন্ডেশনের প্রধান উপদেষ্টা শামীম আহমেদ।