প্রতিবছর শীত এলেই জলাশয়, বিল, হাওড়, পুকুর ভরে যায় নানা রঙ-বেরঙের নাম না জানা অতিথি পাখিতে। অতিথি হলেও নিজেদের জীবন বাঁচাতে সাইবেরিয়ার অঞ্চল থেকে এ পাখিরা ঝাঁকে ঝাঁকে আমাদের দেশে হাজির হয়। এ সব পাখির কলকাকলি আর জলোৎসবে মৌলভীবাজারের হাইল হাওরের একাধিক বিল-জলাশয়ে অন্য রকম পরিবেশ বিরাজ করছে। তবে জলবায়ুর পরিবর্তনের ফলে হাওর-বিলে খাদ্যের অভাব দেখা দেয়ায় পরিযায়ী পাখির উপস্থিতি দিন দিন কমছে।
হিম শীতল দেশ সাইবেরিয়া থেকে কুয়াশার চাদর ভেদ করে হাজার মাইল পথ পাড়ি দিয়ে ছুটে আসা পরিযায়ী পাখির কোলাহলে মুখর এখন মৌলভীবাজার হাইল হাওর। শীতের ভোর, এমনকি দিনের সোনালী রোদ গায়ে মেখে, বিচিত্রসব পাখির ডানা ঝাপটানোর শব্দ আর জলোৎসব বাড়িয়ে দিয়েছে হাওর পাড়ের সৌন্দর্য। এ শীতে বেগুনি কালেম, বালিহাঁস, কালকোর্ট, পাতিসরালি, কাছতেচড়াসহ বিভিন্ন প্রজাতির যেন পাখির মেলা বসেছে। পাখিদের দেখে অভিভূত সবাই।
পাখি দেখতে আসা এক দর্শনার্থী জানান, এখানে এসে ৩০ প্রজাতির পাখি দেখেছি। সেই সঙ্গে আমরা পাখির ছবিও তুলেছি।
অন্য একজন জানান, এখানে আসায় আমি খুবই অভিভূত। তবে এখানে আসার রাস্তাঘাট খুবই খারাপ।
পরিবেশ অধিদপ্তর জানায়, জলবায়ুর প্রভাবে হাওর জুড়ে খাদ্য সঙ্কট ও উপযুক্ত পরিবেশ না থাকায় পরিযায়ী পাখির উপস্থিতি কমে এসেছে। তবে পাখিদের নিরাপদ বিচরণে পাহারার ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে বলে জানায় বন বিভাগ।
মৌলভীবাজার পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিদর্শক মো. ফখর উদ্দিন চৌধুরী বলেন, পরিবেশের বিরূপ প্রভাবের কারণে অতিথি পাখির সংখ্যা দিন কমে কমেছে। সেই সঙ্গে পর্যাপ্ত পরিমাণ খাবার পাচ্ছে না। এই বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
মৌলভীবাজার বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা আ ন ম আব্দুল ওয়াদুদ বলেন বলেন, এদের দেখবাল সুষ্ঠুভাবে করতে। সেই সঙ্গে খাবার বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে। এবং যাতে তাদের শিকার না করা হয় সেদিকেও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে।
২০০৩ সালে ভূমি মন্ত্রণালয়, বিলুপ্ত প্রজাতির মাছের বংশ রক্ষার্থে হাইল হাওরের তিনটি বিলের সমন্বয়ে ১৭০ হেক্টর আয়তনের জলাভূমিকে একটি স্থায়ী অভয়াশ্রম হিসেবে ঘোষণা করা হয়।