শুধু মণিপুরে নয়, ভারতের উত্তর-পূর্বের সব রাজ্যেই এনআরসি কার্যকর করা হবে বলে জানিয়েছে বিজেপি।
'বাংলাদেশি'সহ অবৈধদের বিতাড়ন করাই নরেন্দ্র মোদি সরকারের লক্ষ্য বলে জানান বেশ কয়েকটি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী।
এরই মধ্যে অবৈধ অভিবাসী শনাক্তে মেঘালয়ে ধরপাকড় শুরু হয়েছে। এ নিয়ে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে বাংলাদেশ সংলগ্ন এ রাজ্যে।
আসামের নাগরিক তালিকা থেকে ১৯ লাখ বাসিন্দাদের বাদ পড়া নিয়ে চলমান সঙ্কটের মধ্যেই রাজ্যটিতে সফর শুরু করতে যাচ্ছেন কংগ্রেস নেতারা।
আসামে জাতীয় নাগরিকপঞ্জিতে নাম না ওঠায় উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় দিন কাটাচ্ছেন ১৯ লাখের বেশি বাসিন্দা। কর্তৃপক্ষ বলছে, যারা নাগরিকত্ব প্রমাণে ব্যর্থ হবেন, তাদের বন্দি শিবিরে রাখা হবে। এতে অনেকেই রয়েছেন গ্রেফতার আতঙ্কে।
কর্তৃপক্ষ বলছে, এনআরসিতে নাম না ওঠায়, এখন আমাদের অন্য দেশে পাঠিয়ে দেয়া হবে। আমরা কেন যাবো? আমাদের জন্ম এখানেই, সে কাগজপত্রও আছে।
আসামে এনআরসি নিয়ে চলমান সঙ্কটের মধ্যেই, নাগরিক তালিকায় বাদ পড়া বাসিন্দাদের সব রকম সহায়তা দিতে শুক্রবার থেকে ১৬ দিনের সফর শুরু করছে ভারতীয় কংগ্রেসের নেতারা। এতে দলটির অনেক জ্যেষ্ঠ নেতা যোগ দেবেন বলে জানা গেছে।
এ অবস্থায় মণিপুরে এনআরসি কার্যক্রম শুরু করতে যাচ্ছে কর্তৃপক্ষ। ইতোমধ্যে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী বীরেন সিং।
মণিপুর মুখ্যমন্ত্রী এন. বীরেন সিং বলেন, কেন্দ্রীয় সরকারকে বলেছি, আমাদের সন্দেহ রয়েছে এখানকার নাগরিকদের নিয়ে। এখানে ভারতীয় নয় এমন অনেকেই বাস করছেন। মণিপুরে এনআরসির করার প্রক্রিয়া তিন-চার মাস আগেই শুরু হয়েছে। শীঘ্রই যা চূড়ান্ত আকারে শুরু হবে। এমনকি পুরো উত্তরপূর্বের সব রাজ্যেই এনআরসি হবে।
এদিকে, অবৈধ অভিবাসী সন্দেহে বাংলাদেশ লাগোয়া রাজ্য মেঘালয়ে শুরু হয়েছে ধরপাকড়। অভিবাসী ইস্যুতে সরকার আরও কঠোর হচ্ছে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী কনরাড সাংমা।
এছাড়া ঝাড়খণ্ডেও এনআরসি চালু করার দাবি জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী রাঘুবার দাস। তিনি দাবি করেন, তার রাজ্যে অবৈধ অভিবাসী রয়েছে। তাদের তাড়াতেই নাগরিক তালিকা করার দাবি তার। একই সঙ্গে মহারাষ্ট্রেও এনআরসির দাবি উঠেছে। সেখানকার মুম্বাইয়ে অবৈধদের আটক রাখতে বন্দি শিবির তৈরি করা হচ্ছে বলে জানা গেছে।
আসামের পর এবার সেভেন সিস্টার্সের অন্যান্য রাজ্যেও এনআরসি কার্যকরের ঘোষণায় স্থানীয় অনেকের মাঝেই নাগরিকত্ব হারানোর শঙ্কা দেখা দিয়েছে। নাগরিক তালিকার নামে বিজেপি কূটকৌশলের আশ্রয় নিয়েছে বলে অভিযোগ বিরোধীদলগুলো। বিশ্লেষকরা বলছেন, ভারতের অধিকাংশ রাজ্যে এনআরসি চালু হলে পরিস্থিতি আরও জটিল হতে পারে।