কোনো সন্ত্রাসী হামলায় মুসলমান জড়িত থাকলে পুরো মুসিলম সম্প্রদায়কে দায়ী করা হলেও একজন শেতাঙ্গ উগ্রপন্থীর হামলার বেলায় তা হয় না বলে মন্তব্য করেছেন আলোচিত মার্কিন নারী কংগ্রেস সদস্য ইলহান ওমর। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বর্ণবাদী মন্তব্যের শিকার এ নারী আল-জাজিরাকে দেয়া সাক্ষাতকারে সৌদি আরবের কাছে যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র বিক্রির কঠোর সমালোচনা করেন। ইলহান ওমরকে দেশে ফেরত যাওয়ার কথা বলায় ট্রাম্পের কঠোর সমালোচনা করেছেন সোমালিয়ার সাধারণ মানুষ।
গেল সপ্তাহে নারী কংগ্রেস সদস্যদের আক্রমণ করে টুইট করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। প্রগতিশীল চার নারী কংগ্রেস সদস্য আলেক্সান্দ্রিয়া ওকাসিও করতেজ, রাশিদা তালিব, আয়ান্না প্রেসলি ও ইলহান ওমরকে নিয়ে এধরনের বর্ণবিদ্বেষী বক্তব্য দেয়ায় যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে শুরু হয় ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা।
এমন প্রেক্ষাপটে রোববার ট্রাম্পের-বর্ণবাদী মন্তব্যের শিকার ইলহান ওমরের একটি সাক্ষাতকার সম্প্রচার করে কাতার-ভিত্তিক সংবাদ মাধ্যম আল-জাজিরা। ১৩ জুন ধারণকৃত ওই সাক্ষাতকারে যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ রাজনীতি, অভিবাসন সঙ্কট, নাইন ইলেভেন হামলা এবং মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো সাথে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক নিয়ে কথা বলেন আলোচিত এ নারী কংগ্রেস সদস্য।
সোমালীয় বংশোদ্ভুত এ ডেমোক্র্যাট সদস্য বলেন, নাইন/ইলেভেনের ভয়াবহ হামলায় আল-কায়েদা দায় স্বীকার করলেও এর জন্য পুরো মুসিলম সম্প্রদায়কে দায়ী করা উচিত হবে না। সৌদি আরবের কাছে যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্রবিক্রির কঠোর সমালোচনা করে ইলহান ওমর বলেন, ইয়েমেনের মানবিক সঙ্কটের জন্য সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাত তাদের দায় এড়াতে পারে না।
ইলহান ওমর বলেন, ২০১৬ সালের নির্বাচনে রুশ হস্তক্ষেপের অভিযোগ উঠলেও প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এটাতে কোনো সমস্যা দেখছেন তা। তিনি বুঝতে পারছেন না যুক্তরাষ্ট্রে কি ধরনের সমস্যা তৈরি হচ্ছে। কোনো বিদেশি শক্তি আমেরিকার সরকার গঠনে হস্তক্ষেপ করুক তা আমরা সহ্য করবো না। কোনো মুসলমান হামলা চালালে পুরো মুসলিম সম্প্রদায়কে সন্ত্রাসী আখ্যা দেয়া হচ্ছে। অথচ যখন কোনো শেতাঙ্গ ব্যক্তি স্কুল অথবা সিনেমা হলে হামলা চালাচ্ছে আমরা তখন ওই গোষ্ঠীকে সন্ত্রাসী বলছি না।
এদিকে, ইলমান ওমরকে নিজ দেশে ফিরে যাওয়ার আহ্বান জানিয়ে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যে বক্তব্য দিয়েছেন তার কঠোর নিন্দা জানিয়েছে সোমালিয়ার সাধারণ মানুষ।
তারা বলেন, ট্রাম্পের এ ধরনের বক্তব্য খুবই হাস্যকর। ট্রাম্পকে আমরা মনে করিয়ে দিতে চাই, তার পরিরবার ও স্ত্রীও অভিবাসী।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এবং ইলহান ওমরের সমান সাংবিধানিক অধিকার রয়েছে। কারণ তারা দুজনই যুক্তরাষ্ট্রে নাগরিক। ট্রাম্পের বাবাও জন্মগতভাবে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক নন। সুতরাং তার মুখে এ ধরনের বক্তব্য মানায় না।
এদিকে, ইসলাইলের কট্টর সমালোচক হলেও মার্কিন কংগ্রেস সদস্য রাশিদা তালিব এবং ইলহান ওমরকে দেশটিতে সফরের অনুমতি দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত ইসরাইলি রাষ্ট্রদূত। যুক্তরাষ্ট্রের অধিকার রক্ষা এবং ইসরাইলকে বয়কেটর এটি প্রচারণায় আগামী সপ্তাহে অধিকৃত পশ্চিম তীর সফরে যাওয়ার কথা রয়েছে তাদের।