ছেলেধরা সন্দেহে নওগাঁ, কুমিল্লাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে গণপিটুনির শিকার হয়েছেন বেশ কয়েকজন। এদের মধ্য কয়েকজনকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। গুজবে কান দিয়ে এ ধরনের নৃশংসতার হাত থেকে রেহাই পাচ্ছেন না দুই সন্তানের মা, গৃহবধূ, তরুণ। এমনকি দলবেঁধে মাছ ধরতে গিয়েও গণপিটুনির শিকার হচ্ছেন জেলেরাও। ভুক্তভোগী ও স্বজনদের অভিযোগ, গুজবের সুযোগে কিছু অতি উৎসাহী লোক এমন ঘটনা ঘটাচ্ছে। এদিকে, নারায়ণগঞ্জে গণিপিটুনির ঘটনায় ১৪ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
রাজধানীর উত্তর বাড্ডা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সন্তানকে স্কুলে ভর্তির ব্যাপারে খোঁজ নিতে গিয়েই মানুষের নৃশংসতার শিকার হন তাসলিমা বেগম রেনু। দুই সন্তানের জননী রেনুকে প্রতিবেশীদের কখনই সন্দেহ হয়নি। অথচ সন্তানকে স্কুলে ভর্তির খোঁজ খবর নিতে গিয়েই গণপিটুনিতে প্রাণ গেলো স্বামী হারা রেনুর।
মান্দার বুড়িদহ গ্রামের রঞ্জিতের পুকুরে মাছ ধরতে যাওয়াই কাল হলো ৭জেলের। রোববার সকালে কিছু মাছ বস্তায় ভরে বাজারে নিয়ে যাচ্ছিলো তারা। এ সময় গ্রামের লোকজন তাদের ছেলে ধরা সন্দেহ করে গণপিটুনি দেয়। পরে পুলিশ ৭ জনকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে।
ময়মনসিংহের ভালুকার ধামশুর এলাকার একটি মোটর সাইকেলের যন্ত্রাংশ তৈরির কারখানায় আয়ার কাজ করেন, পাঁচগাও গ্রামের গৃহবধূ মালেকা খাতুন। শনিবার দুপুরে কারখানা থেকে ছুটি নিয়ে ডাক্তার দেখাতে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দিকে রওয়ান হন তিনি। পথে শরীর খারাপ লাগলে একটি বাড়িতে ঢুকে পানি চান তিনি। এ সময় স্থানীয় কয়েকজন ওই নারীকে ছেলেধরা সন্দেহ করে হাত-পা বেঁধে গণপিটুনি দেয়।
এদিকে, নেত্রকোনায় ছেলেধরা সন্দেহে গণপিটুনিতে নিহত যুবক রবিন, প্রকৃতপক্ষে ছেলেধরা নয় বলে জানিয়েছে পুলিশ। সে এলাকার একজন মাদকসেবী। বিকৃত মানসিকতার কারণে ওই শিশুটিকে নির্যাতনের পর ধরা পড়ার ভয়ে হত্যা করে।
এছাড়া, একই গুজবে নারায়ণগঞ্জে ২, সাভারে ১ ও মৌলভীবাজারে একজনকে গণপিটুনিতে হত্যা করা হয়। হামলার ঘটনা ঘটে গাজীপুর ও কুমিল্লায় । গুজবে বিভ্রান্ত না হয়ে ছেলেধরা সন্দেহ হলে, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে তুলে দেয়ার আহ্বান জানিয়েছে পুলিশ।