ভাগ্য কখন কার দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে তা জানার উপায় নেই। তবে আশাই মানুষকে আগামী দিন বেঁচে থাকার স্বপ্ন জাগায়। আজকে যে শিশুটা সম্পর্কে বলবো তার ভাগ্য কেমন যেনো তার দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। আর সে আশাতে বুক বেঁধেছে। আশায় বুক বেঁধেছে বললে ভুল হবে বরং আত্মবিশ্বাসী হয়ে ভাগ্যকে তার দিকে তাকাতে এক প্রকার বাধ্য করতে লড়াই করে যাচ্ছে।
বলছি খুলনার ৯ বছরের শিশু ফারহান কাইফ অহনের কথা। সোশ্যাল মিডিয়ার বদৌলতে অহন এখন অনেকটাই পরিচিত একটা নাম। অহন এসেছিলো সময় নিউজের স্বাস্থ্য বিষয়ক অনুষ্ঠান বদ্যি-বাড়ি নামক অনুষ্ঠানে। তার কথাতে আবেগঘন পরিস্থিতির সৃষ্টি হলেও মেধাবী অহন তখনও ছিলো অনেকটাই দৃঢ়। প্রথমে সে হেসে হেসে কথা বললেও চোখের কোনে লুকিয়ে থাকা পানি, আর বুকের ভেতর জমানো আশাটাকে অহন আর বেশিক্ষণ লুকিয়ে রাখতে পারেনি। এক মুহূর্তে যেনো নিজের বেঁচে থাকার ইচ্ছাটা প্রকাশ করে ফেলে সবার কাছে।
অহন বলে, 'আমার জন্য আমার বাবা-মায়ের কিছু নেই। এটা দেখে আমার খুব খারাপ লাগে। সবার কাছে আমার একটাই অনুরোধ আমি সবার মাঝে বেঁচে থাকতে চাই।'
অহনের ৫ মাস বয়সে ধরা পড়ে সে মরণব্যাধি বায়োসাইটোপেনিয়া রোগে আক্রান্ত। এর জন্য প্রতিমাসে তার শরীরে ৩-৪ ব্যাগ রক্তের প্রয়োজন পড়ে। অহনের প্রয়োজন অস্থিমজ্জা প্রতিস্থাপন (বোন মেরো ট্রান্সপ্লান্ট)। আর ভারতের বেঙ্গালুরুর হাসপাতালের চিকিৎসকদের পরামর্শ রয়েছে ১০ বছরে পা দেওয়ার আগেই অস্থিমজ্জা প্রতিস্থাপনের কাজটি সম্পন্ন করার। এ জন্য লাগবে ৩৫ থেকে ৪০ লাখ টাকা। আগামী ৫ আগস্ট অহন ১০ বছরে পা দেবে। এ অবস্থায় উদ্বিগ্ন রয়েছেন তার বাবা-মা। কামনা করছেন সকলের সহযোগিতা।
অহন অনেক মেধাবী, স্কুলে গিয়ে পড়াশুনার সুযোগ না হলেও এমন কিছু করে দেখিয়েছে যা কিনা স্কুলে গিয়েও তার বয়সী শিশুরা করতে পারে না। অহন বাসায় বসেই পড়ালেখা করে। তিনটি সফটওয়্যার বানিয়েছে সে। যেটি এন্ড্রয়েড মোবাইলে ব্যবহার করা যাচ্ছে। অহনের তৈরি সফটওয়্যার হচ্ছে অহনস ব্রাউজার, শুটিং গেম-১২০০ ও ফটোসপ-২। বড় হয়ে সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার ইচ্ছা অহনের।
এত বড় রোগে আক্রান্ত অহনেরও আছে অনেক ইচ্ছা। অহন বলে, 'বাংলাদেশে একটা বোন মেরো ট্রান্সপ্লান্টের জন্য হাসপাতাল বানানোর ইচ্ছা আমার। আমার ভাগ্য ভালো যে, আমার ভাইয়া আপুরা আছেন। কিন্তু বাংলাদেশে আমার মত অনেক অহন আছে।'
অহনের বেঁচে থাকার জন্য পরবর্তী চিকিৎসা হচ্ছে বোন মেরো ট্রান্সপ্লান্ট করা। আর এর জন্য খরচ লাগবে প্রচুর। যে খরচের সামর্থ্য অহনের বাবা মায়ের এখন আর নেই। তাই সবার মাঝে বেঁচে থাকতে, অহনকে সহযোগিতার হাত বাড়ালে অহনও একদিন হতে পারে এ দেশের গর্ব। অহনের বেঁচে থাকতে শুধু প্রয়োজন সকলের দোয়া এবং সহযোগিতা।
অহনকে সহোযোগিতা করার ঠিকানা শিরপা পারভিন A/C: 0200003244054 অগ্রণী ব্যাং লিমিটেড, গোয়ালপাড়া শাখা, খুলনা।
বিকাশ নাম্বার: 01955803728, 01797170309