স্বাধীনতার ৪৭ বছরেও, ক্রীড়া ক্ষেত্রে নানা বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন দেশের নারী ক্রীড়াবিদরা। পুরুষের তুলনায় সুযোগ সুবিধা কম পাওয়ায়, প্রতিভা থাকার পরও পিছিয়ে আছেন তারা। নারীদের খেলায় নেই প্রচার প্রচারণা ও পর্যাপ্ত পৃষ্ঠপোষকতা। তবে, আন্তর্জাতিক আসরগুলোতে অংশগ্রহণ বাড়ানোর পাশাপাশি সুযোগ সুবিধা বাড়লে ক্রীড়াক্ষেত্রে আরো এগিয়ে যাবে নারীরা। এমনটাই মত সংশ্লিষ্টদের। সমস্যা সমাধানে সরকারের পক্ষ থেকেও মিলেছে সুযোগ সুবিধা বাড়ানোর আশ্বাস।
ক্রিকেট বাঙালির প্রাণের খেলা। ২২ গজের মঞ্চে যখন সাকিব, মাশরাফিরা ঝড় তোলেন, তখন তার রেশ ছড়িয়ে পড়ে টেকনাফ থেকে তেতুলিয়া। কিন্তু এই কাজটিই যখন দেশের নারী ক্রিকেটারদের হাত ধরে আসে তখন তাদের সাফল্যের গল্পের খবর খুব একটা পৌঁছায়না সবার কানে।
স্বাধীনতার ৪৭ বছরেও অন্য সব ক্ষেত্রের মত ক্রীড়াঙ্গনেও প্রতিনিয়ত বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন নারীরা।
বাংলাদেশ জাতীয় নারী ক্রিকেটের অধিনায়ক রুমানা বলেন, 'আমরা অনেক দুঃখ পাই। যেখানে ছেলেরাও খেলে মেয়েরাও খেলে সেখানে ছেলেদের পারিশ্রমিক বলেন আর যেসব সুযোগ-সুবিধা সব কিছুতেই এগিয়ে আছে তারা। শুধু নারী দিবসেই নয় আমরা চাই সব দিবসেই আমাদের সম্মান দেয়া হোক।'
শুধু কি ক্রিকেট? বিশ্বের অন্যান্য দেশে নারীদের গলফ বেশ জনপ্রিয় হলেও, বাংলাদেশে নেই এর কোন চর্চা। গলফ ছাড়াও জাতীয় খেলা কাবাডি, অ্যাথলেটিক্সসহ প্রায় সব ক্ষেত্রেই নানা বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন নারীরা।
প্রথম পেশাদার নারী গলফার অরনী বলেন, 'আমাদের টুর্নামেন্ট নেই। প্রতিযোগীতাই তো নেই। যখন প্রতিযোগীতা বাড়বে তখন প্রতিযোগীও বাড়বে।
বাংলাদেশ জাতীয় নারী কাবাডি দলের অধিনায়ক মালেকা বলেন, 'আমাদের কাবাডি আসলে তেমন প্রচার নেই। আমাদের অনেক পদক আছে। সামনে আমরা আরো ভাল কিছু দিতে চাই।'
এ সমস্যাগুলো থেকে উত্তরণের জন্য ফেডারেশনগুলোর পাশাপাশি সরকারকেও এগিয়ে আসার তাগিদ দিয়েছেন সাবেকরা।
শারমিন সুলতানা রত্না বলেন, 'প্রতিটা খেলায় মেয়েদের খেলাটা নিশ্চিত করতে হবে। যেমন কোনো একটা খেলায় মেয়েরা আসবেই। এতে পরিবারেও এগিয়ে আসতে হবে।'
আগামীতে নারীবান্ধব ক্রীড়াক্ষেত্র তৈরিতে সরকারের পক্ষে থেকেও মিলেছে সুযোগ সুবিধা বাড়ানোর আশ্বাস।
সংসদ সদস্য আমাতুল কিবরিয়া কেয়া চৌধুরী বলেন, 'ট্রেনিং কমিটিতে যখন এটা আলোচনা হবে তখন আমাদের অনেক প্রধানমন্ত্রীকে এ ব্যাপারে জানানো হবে।'
নারী পুরুষের সমতায় শুরু হতে পারে উন্নয়নের যাত্রা। তাই শুধু একটি বিশেষ দিনেই নয়, সব সময়েই নারীকে দেয়া হোক তার সাফল্যের প্রাপ্য সম্মান। এমনটাই প্রত্যাশা এই ক্রীড়া নক্ষত্রদের।