কুড়িগ্রামের উপর দিয়ে কখনও মৃদু, মাঝারি আবার কখনও তীব্র টানা শৈত্য প্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। স্মরণকালের হাড়-কাঁপানো শীত আর ঘন কুয়াশার কারণে জনজীবন জবুথবু হয়ে পড়ার পাশাপাশি কৃষি ক্ষেত্রেও বিরূপ প্রভাব পড়েছে। বোরো মৌসুমে ধানের বীজতলার চারা পোড়া ও ঝলসানো, আলু ক্ষেতে নাবি ধসা রোগ, সবজি ক্ষেতে পোকা আক্রমণসহ নানা সমস্যায় শঙ্কায় আছেন কৃষকরা।
দেশের উত্তরাঞ্চলে ১৬টি নদ-নদী বিধৌত কুড়িগ্রামে তাপমাত্রার কাঁটা এবার ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমে এসেছিল। জেলায় স্বাধীনতার পর যা সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। সন্ধ্যার পর থেকে পরদিন দুপুর পর্যন্ত ঘন কুয়াশার আস্তরণে ঢাকা পড়ে থাকছে চারদিক। এরপর সূর্য ঝিলিক দিলেও তাতে উত্তাপ পাওয়া যায়নি। টানা ১০ দিন ধরে এ অবস্থা চলছে। এরফলে জনজীবনের পাশাপাশি কৃষিক্ষেত্র স্থবির হয়ে পড়েছে। ধানের বীজতলার চারা হলুদ বর্ণ ধারণ করেছে। পাতা মরে যাচ্ছে। সেচসহ নানা ব্যবস্থা গ্রহণ করেও চারাগুলো রক্ষা করা যাচ্ছেনা। বাধ্য হয়ে চারা তুলে রোপণ করছেন অনেকে। আলু ক্ষেতে নাবি ধসা রোগ রোধে ছত্রাকনাশক ওষুধ প্রয়োগ করছেন। সবজি ক্ষেত রক্ষায় দিচ্ছেন সেচ। তারপরও প্রতিকার পাওয়া যাবে কি না-এ নিয়ে শঙ্কায় পড়েছেন কৃষকরা।
এই পরিস্থিতিতে রাতের বেলা বোরো মৌসুমে ধানের বীজতলা পলিথিন দিয়ে ঢেকে রাখা এবং আলু ক্ষেতে ছত্রাক নাশক ওষুধ প্রয়োগসহ কৃষকদের বিভিন্ন ধরণের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে বলে জানালেন জেলা কৃষি দপ্তরের এই শীর্ষ কর্মকর্তা।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণের দপ্তরের ভারপ্রাপ্ত উপ-পরিচালক মোঃ আব্দুর রশীদ বলেন, 'এরইমধ্যে আমরা আলু ক্ষেতে নাবি ধসা রোগের জন্য আগাম কীটনাশক প্রয়োগের জন্য পরামর্শ প্রদান করেছি।'
জেলায় এবার ১ লাখ ১২ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নেয়া হয়েছে। এজন্য কৃষকরা সাড়ে ৬ হাজার হেক্টরের বেশি জমিতে বীজতলা তৈরি এবং সাড়ে ৭ হাজার হেক্টর জমিতে আলু আবাদ করেছেন কৃষকরা।