মেক্সিকো সীমান্তে দেয়াল নির্মাণে কংগ্রেসের অনুমোদন না পেলে যুক্তরাষ্ট্রে জরুরি অবস্থা জারির হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বৃহস্পতিবার (১০ জানুয়ারি) মেক্সিকো সীমান্ত পরিদর্শনে গিয়ে আবারও তিনি বলেন, প্রেসিডেন্ট হিসেবে সে ক্ষমতা তার রয়েছে।
এদিকে ডেমোক্রেট নেতারা কেন্দ্রীয় সরকারের ২০ দিন ধরে চলতে থাকা অচলাবস্থা নিরসনে ভোটাভুটির প্রস্তাব তুললেও রিপাবলিকান নেতা মিচ ম্যাককোনেলের বিরোধিতায় তা বাতিল হয়ে যায়।
তিন সপ্তাহ ধরে হচ্ছে না বেতন। মার্কিন প্রশাসনিক কর্মচারীরা তাই এভাবেই নেমে এসেছেন রাস্তায়। টানা ২০ দিন ধরে প্রেসিডেন্টের আদেশে বন্ধ রয়েছে মার্কিন প্রশাসনের সব ধরনের কর্মকাণ্ড।
কর্মচারীরা জানান, এই অচলাবস্থা সম্পূর্ণ কৃত্রিম। প্রেসিডেন্ট আমাদের পথে বসিয়ে দিয়ে রাজনীতি নিয়ে খেলছেন। এটা খুবই লজ্জাজনক। সিনেটকে ধিক্কার জানাই। এ পরিস্থিতি কিছুতেই চলতে পারে না। পরিশ্রমী মার্কিনীরা কয়দিন পর না খেয়ে মরবে। এই অবস্থার পরিবর্তন চাই। অচলাবস্থার অবসান চাই।
এমনিতেই আমাদের খুব টানাপড়েনের সংসার। একদম হিসাব করে মাস চলতে হয়। তার ওপর ২০ দিন থেকে কাজ ছাড়া বসে আছি। প্রতি মুহূর্তেই আতঙ্ক কাজ করছে, কারণ আমরা জানি না সরকারের এই অচলাবস্থা কবে শেষ হবে।
কেন্দ্রীয় সরকারের এই অচলাবস্থা নিরসনে ডেমোক্রেটরা পদক্ষেপ নেয়ার চেষ্টা করলেও সংখ্যাগরিষ্ঠ সিনেটর মিচ ম্যাককনেল তা বানচাল করে দেন।
ডেমোক্রেট দলীয় সিনেটর ঢাক সুমার বলেন, এই প্রস্তাবে এমন কোন বিষয় উল্লেখ নেই যার বিরোধিতা করা যায়। তাহলে ম্যাককনেল কেন এটা বাতিল করে দিলেন? কেন অচলাবস্থা নিরসনে আমরা ভোটাভুটি করবো না? কারণ এই রিপাবলিকান নেতা প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ছত্রছায়ায় থাকতে চান। তিনি বলেছেন, প্রেসিডেন্ট সম্মতি না দেয়া পর্যন্ত তিনি আমাদের বিল পাশ হতে দেবেন না।
সরকারের অচলাবস্থায় জনগণ বিপাকে থাকলেও দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের তাতে নেই কোন ভ্রুক্ষেপ। বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস শহরে মেক্সিকো সীমান্ত পরিদর্শনে গিয়ে দেশে প্রয়োজনে জরুরি অবস্থা জারির হুমকি দেন ট্রাম্প।
ট্রাম্প বলেন, আমি আগেও বলেছি, আবারও বলছি। দেশের জনগণের নিরাপত্তার জন্যই সীমান্তে দেয়াল গড়তে চাই। যুক্তরাষ্ট্রের জন্য এটাই সর্বোত্তম। কিন্তু কংগ্রেসরা দেয়াল না তুলে নানা অবৈধ সুবিধা নিতে চায়। কিন্তু দেয়াল নির্মাণের প্রস্তাবে কংগ্রেসের সম্মতি না পেলে এই অচলাবস্থা তো চলবেই, সারা দেশে জরুরি অবস্থাও জারি করবো। মনে করিয়ে দিতে চাই, প্রেসিডেন্ট হিসেবে সে ক্ষমতা আমার রয়েছে।
এদিকে, এ কারণে বিশ্ব অর্থনৈতিক সম্মেলনেও অংশ নিচ্ছেন না ট্রাম্প। পূর্বনির্ধারিত সময় অনুযায়ী বৃহস্পতিবার সুইজারল্যান্ডের দাভোসে যাওয়ার কথা থাকলেও তিনি পূর্বনির্ধারিত এ সফর বাতিল করেন।