ভৌগলিক অবস্থান, বৈচিত্র্যময় মাটির কাঠামো, নদী মার্তৃক দেশ হওয়ায় বাংলাদেশে প্রাকৃতিক দুর্যোগের ছোবল অনেকটা নিয়মিত ঘটনা। এর প্রভাবে প্রতিবছর জিডিপির প্রায় ৪ শতাংশ পিছিয়ে পড়ছে। টেকসই উন্নয়ন ধরে রাখতে জীব-বৈচিত্র্য রক্ষায় বিনিয়োগের জন্য ব্যাংকিং খাতের বিশেষ ভূমিকা রয়েছে বলে জানান বিশেষজ্ঞরা।
একইসঙ্গে সব পর্যায়ে এ বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি করারও পরামর্শ দেন বক্তারা। বৃহস্পতিবার (৬ ডিসেম্বর) রাজধানীতে এক সেমিনারে একথা বলেন তারা।
প্রাকৃতিক দুর্যোগ প্রবণ দেশ হওয়ায় টেকসই অর্থনৈতিক উন্নয়নে ব্যাংকিং খাতের গুরুত্ব অনুধাবন করেই দেশের ব্যাংকগুলোকে ২০১০ সালে 'গ্রীণ ব্যাংকিং' এ অর্থায়নের নির্দেশনা দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। কয়েকটি বিষয়ে বিনিয়োগ হলেও জীব-বৈচিত্র্য রক্ষায় বিনিয়োগ এখনো শূণ্যের কোটায়।
রাজধানীর মিরপুরে বিআইবিএম কর্তৃক সরকারি ৩টি ও বেসরকারি ১৭টি মিলিয়ে ২০টি ব্যাংকের দেয়া রিপোর্টের ভিত্তিতে এমন তথ্যই তুলে ধরা হয় গ্রিন ব্যাংকিং সেমিনারে।
বিআইবিএমের সহযোগী অধ্যাপক মো. তাজুল ইসলাম বলেন, যদি ম্যানগ্রোভে অর্থায়ন না করে শুধুমাত্র শিল্পায়নে বেশি করে অর্থায়ন করি, তবে ম্যানগ্রোভ ধীরে ধীরে ধ্বংস হয়ে যাবার কারণে কোস্টাল এবং ফিশারিজ এর মাধ্যমে জীবিকা, তিনটি জিনিসের ওপরেই খারাপ ধরনের প্রভাব পড়বে। যা শিল্পখাতকেও ধ্বংস করার পর্যায়ে নিয়ে যাবে।
সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর মো. মনিরুজ্জামান গ্রিন ব্যাংকিং এর অংশ হিসেবে জীব-বৈচিত্র্য রক্ষায় বিনিয়োগের কথা বলেন।
তিনি বলেন, 'আমরা পলিসি দেবো, কিন্তু বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে মূলত ব্যাংকার বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ করবে।
দূর্যোগ মোকাবেলায় সক্ষমতা বৃদ্ধিতে গ্রাহক থেকে শুরু করে স্কুল পর্যায় থেকেই সচেতনতা বাড়ানোর দিকে লক্ষ্য দেয়ার পরামর্শ দেন বক্তারা।
বিআইবিএমের বিশেষ অধ্যাপক হেলাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, সচেতনতা বাড়ানোর জন্য স্কুল লেভেল থেকে এটা শুরু করা সবচেয়ে বড় ব্যাপার।
এ সময় ব্যাংক সংশ্লিষ্টরা বিভিন্ন উদ্যোগ ও সমস্যা তুলে ধরেন।
তারা বলেন, ব্যাংকের কাগজপত্র সম্পর্কিত ঝক্কিঝামেলা এবং ইনভেস্টমেন্ট রিস্কি হবার কারনে তারা গ্রিন ফাইনান্সে বিনিয়োগ করতে চান না।
ব্যাংকিং লেনদেনে যেকোনো লেনদেন হোন, তা টেকসই ও স্বচ্ছভাবে বিনিয়োগ হচ্ছে কিনা তা নিশ্চিত করে বিনিয়োগ করারও পরামর্শ দেন বক্তারা।
উল্লেখ্য যে, ১৯৮০ থেকে সাল পর্যন্ত ২৮ বছরে ২১৯টি প্রাকৃতিক দুর্যোগের শিকার হয়েছে বাংলাদেশ। এতে প্রতিবছরই ক্ষতি হয়েছে হাজার হাজার কোটি টাকা।