বীরপ্রতীক খেতাবপ্রাপ্ত তারামন বিবিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য হেলিকপ্টার যোগে ঢাকার সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) নিয়ে আসা হচ্ছে। বৃহস্পতিবার (৮ নভেম্বর) দুপুরে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে ময়মনসিংহ সিএমএইচ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানকার চিকিৎসকরা স্বাস্থ্য পরীক্ষা শেষে তাকে ঢাকা সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) ভর্তির পরামর্শ দেন।
ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসক ড. সুভাষ চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, ‘বৃহস্পতিবার দুপুরে বীরপ্রতীক তারামন বিবিকে অসুস্থ অবস্থায় ময়মনসিংহ সিএমএইচ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তিনি শ্বাসকষ্টসহ বিভিন্ন সমস্যায় ভুগছেন। পরে সেখানে স্বাস্থ্য পরীক্ষা শেষে আরও উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে আর্মি এভিয়েশন হেলিকপ্টারযোগে ঢাকা সিএমএইচ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।’
তারামন বিবির পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরেই তারামন বিবি শ্বাসকষ্ট আর কাশিতে ভুগছেন। হঠাৎ করে তা বেড়েছে। এছাড়া তিনি বৃহস্পতিবার সকাল থেকে কথা বলতে পারছেন না।
তারামন বিবির ছেলে আবু তাহের বলেন, ‘মায়ের শরীরের অবস্থার অবনতি হয়েছে। তিনি কথা বলতে পারছেন না। ইশারায় বোঝানোর চেষ্টা করছেন। বৃহস্পতিবার দুপুরে ময়মনসিংহ সিএমএইচ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে সেখানকার চিকিৎসকরা মায়ের স্বাস্থ্য পরীক্ষা শেষে তাকে ঢাকা সিএমএইচে ভর্তির পরামর্শ দেন।’
তারামন বিবিকে ঢাকায় নেওয়া হচ্ছে, আবু তাহের আরও বলেন, ‘আমার মায়ের পূর্বের অন্যান্য সমস্যা ছাড়াও আজ স্বাস্থ্য পরীক্ষায় উচ্চমাত্রার ডায়াবেটিস ধরা পড়েছে। আজই আমরা মাকে ঢাকায় নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছি। আমি মায়ের জন্য দেশবাসীর কাছে দোয়া চাচ্ছি।’
রাজীবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা.দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘তারামন বিবির শারীরিক অবস্থা ভালো নয়। তার শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা বাড়ার পাশাপাশি তিনি বর্তমানে কথা বলতে পারছেন না।’
উল্লেখ্য, বীরপ্রতিক তারামন বিবির আসল নাম তারামন বেগম। তার জন্ম কুড়িগ্রাম জেলার রাজীবপুর উপজেলার কাচারিপাড়ায়। তার স্বামীর নাম আবদুল মজিদ। তিনি এক ছেলে ও এক মেয়ের জননী। মুক্তিযুদ্ধের সময় ১১ নম্বর সেক্টরের হয়ে তারামন বিবি মুক্তিবাহিনীর জন্য রান্না, তাদের অস্ত্র লুকিয়ে রাখা, পাকিস্তানি বাহিনীর খবর সংগ্রহ করাসহ সম্মুখযুদ্ধে অংশ নেন। মুক্তিযুদ্ধে সাহসিকতাপূর্ণ অবদানের জন্য ১৯৭৩ সালে বাংলাদেশ সরকার তাকে বীরপ্রতীক খেতাবে ভূষিত করে।