গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে সাঁওতালদের উপর হামলার ঘটনায় মামলা দায়েরের ১৫ মাস পর ময়না তদন্তের জন্য কবর থেকে রমেশ টুডু নামে এক সাওতালের মরদেহ উত্তোলন করেছে পিবিআই। পিবিআই বলছে রমেশ টুডুর মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত করতেই আদালতের অনুমতি নিয়ে তার মরদেহ উত্তোলন করা হয়। অন্যদিকে দীর্ঘদিন পর ময়নাতদন্ত করায় সঠিক প্রতিবেদন নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্টরা।
২০১৬ সালের ৬ নভেম্বর আখ কাটাকে কেন্দ্র করে সাঁওতালদের সঙ্গে রংপুর সুগার মিলের শ্রমিক কর্মচারী ও পুলিশের সংঘর্ষ হয়। সে সময় বসতিতে আগুন জ্বালিয়ে উচ্ছেদ করা হয় সাঁওতালদের। সংঘর্ষে শ্যামল হেমব্রম ও মঙল মার্ডি নামে দু’জনের নিহত হন। এরপর, গণমাধ্যমে রমেশ টুডু নামে আরো একজনের মৃত্যু খবর প্রকাশ হয়। রংপুর চিনিকলের শ্রমিক ও কর্মচারীদের হামলায় তার মৃত্যু হয় বলে দাবি করেন সাঁওতালরা।
শ্যামল ও মঙল মার্ডির লাশের ময়নাতদন্ত হলেও রমেশের লাশ দাফন করা হয় ময়নাতদন্ত ছাড়াই। এ ঘটনায় আদালতে আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে রমেশের লাশ ময়নাতদন্তের নির্দেশ দেন আদালত। মঙ্গলবার সকালে জেলা প্রশাসনের ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে তোলা হয় তার লাশ।
গাইবান্ধার পিবিআই'র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আনোয়ার হোসেন মিয়া বলেন, 'সুষ্ঠু তদন্তের জন্য আদালতের নির্দেশে ডিএনএ পরীক্ষার জন্য লাশটি তোলা হয়।'
গাইবান্ধা গোবিন্দগঞ্জের সহকারী কমিশনার (ভূমি) রাফিউল আলম বলেন, 'সুরত হাল রিপোর্টটি তৈরি করে ময়নাতদন্ত করার জন্য গাইবান্ধার সদর হাসপাতালে পাঠানো হবে।'
জেলা সদর হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা. সিহাব মো. রেজওয়ানুর রহমান বলেন, ওনার মেয়ের ডিএনএ সাথে রমেশ দত্তের ডিএনএ ম্যাচ করা হবে। তারপার আমরা দেখবো এই সেই লোক কিনা। এবং তার হত্যার কারণ সর্ম্পকে জানা যাবে।'
এদিকে, এক বছরের বেশি সময় পর লাশ উত্তোলন করায় ময়নাতদন্তে রমেশের মৃত্যুর সঠিক কারণ উদঘাটন নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন আদিবাসী-বাঙালী সংহতি পরিষদের নেতারা।
গাইবান্ধা আদিবাসী বাঙালী সংহতি পরিষদের আহবায়ক, অ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলাম বাবু বলেন, এতদিন পর লাশ উত্তোলনের ফলে মেডিকেললি তার কোন প্রমাণ পাওয়া যাবে না।'
সাঁওতালদের সঙ্গে রংপুর সুগার মিলের শ্রমিক কর্মচারী ও পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনায় দুটি মামলা হয়। উচ্চ আদালতের নির্দেশে মামলা দুটির তদন্ত করছে পিবিআই।