পাহাড় আর ঝরনার মিতালী এখানে। সঙ্গে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে ছোট-বড় নানান রকমের গাছ। সবুজের অরণ্যের মাঝে ঢুকলে আপনাকে সঙ্গ দেবে হরেক রকমের পাখি। নানান জাতের এসব পাখির ডাকে অতি বেরসিক মানুষটির মাঝেও কিছু সময়ের জন্য এসে ধরা দেবে রোমান্টিকতা। এই সবকিছুই পাওয়া যাবে সীতাকুণ্ডে।

চট্টগ্রাম থেকে ৩৭ কিলোমিটার দূরে সীতাকুণ্ড উপজেলা অবস্থিত। প্রাকৃতিক মনোরম পরিবেশের কারণে দেশি-বিদেশি পর্যটকদের কাছে বিশেষ জনপ্রিয়তা রয়েছে এই জায়গার। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের খুবই কাছে এমন একটি জায়গা আছে, সেটি হয়তো দেশি-বিদেশি অনেক পর্যটকের কাছেই অজানা। তবে যারা জানেন, কিংবা একবার এসেছেন, তারা বারবার এখানে বার বার আসেন।
সীতাকুণ্ডের মনোরম পরিবেশের সঙ্গে বাড়তি পাওনা হিসেবে আগত পর্যটকরা ঘুরে আসতে পারেন ঐতিহাসিক চন্দ্রনাথ মন্দির। দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম সুন্দর মন্দির হিসেবে এটি পর্যটকদের কাছে বিবেচিত হয়ে থাকে। সীতাকুণ্ডের পাহাড়ের চূড়ায় এর অবস্থান। এখানে প্রতিবছর ফেব্রুয়ারি মাসে ‘সিভা চতুর্দশী’ উৎসব হয়। তাছাড়াও, বৌদ্ধ ধর্ম অনুসারীদের ঐতিহাসিক বৌদ্ধ মন্দিরও রয়েছে এখানে। কথিত আছে-এখানে গৌতম বুদ্ধের পায়ের ছাপ আছে।

তাছাড়াও, এই চন্দ্রনাথ পাহাড়ে রয়েছে উঁচু-নিচু পাহাড় বেষ্টিত ইকোপার্ক। যেখানে আছে বিভিন্ন প্রজাতির গাছ-গাছালি আর পশুপাখি। আছে মায়া হরিণ, ভাল্লুক, শুকর, শিয়াল, হনুমান ইত্যাদি। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১ হাজার মিটার উচ্চতায় এই পাহাড়ের ওয়াচ টাওয়ার থেকে দেখা যাবে সন্দ্বীপ চ্যানেলের নীল জলরাশি।

বন্দরনগরীতে প্রবেশদ্বার সিটি গেইট থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার আগেই সীতাকুণ্ড শহর। আর এখান থেকে ৫ কিলোমিটার পরে ফকিরহাট বাসস্ট্যান্ড। এখান থেকে সিএনজি করে সরাসরি যাওয়া যায় সীতাকুণ্ড ইকোপার্ক ও বোটানিক্যাল গার্ডেনে। আর এই ইকোপার্ক থেকে মাত্র ৫ কিলোমিটার দূরেই দেশের একমাত্র গরম পানির ঝরনা অবস্থিত। সারা বছরের বৃষ্টির সময়টুকুতে এই ঝরনা নতুন রূপে আবির্ভূত হয়। তখন যেনো সে ফিরে পায় তার পুরনো যৌবন। তবে বৃষ্টির সময়টুকুতে সীতাকুণ্ডের এলাকা যথেষ্ট পিচ্ছিল থাকে। তাই সাবধানতা অবলম্বন করা ভালো।
যেভাবে যাবেন: ঢাকার কমলাপুর ও সায়েদাবাদ থেকে চট্টগ্রামের উদ্দেশে বিভিন্ন নামের এসি/ননএসি বাস ছাড়ে। সেসব বাসে সীতাকুণ্ড যাওয়া যায়। তাছাড়াও ট্রেনে করেও যাওয়া যায়। বন্ধুরা মিলে ঘুরতে গেলে ট্রেন যাত্রাই উত্তম। বাসের ভাড়া কমবেশি ৩৫০ থেকে সর্বোচ্চ ১২০০ টাকা পর্যন্ত।
যেখানে থাকবেন: চট্টগ্রাম শহরে বিভিন্ন মান ও দামের আবাসিক হোটেল-মোটেল রয়েছে। সেখানে থাকতে পারেন। তাছাড়াও সীতাকুণ্ড অথবা ভাটিয়ারীতেও থাকার ব্যবস্থা রয়েছে।